#books #mohuyaroychoudhuri #diparun #bengalimovie #bengalivlog #mohuya
নিঃসঙ্গ_মহুয়া পাঠ প্রতিক্রিয়া:
--
লিখেছেন বিশিষ্ট কবি, শোভন ভট্টাচার্য
চলচ্চিত্র বিষয়ে আমার আগ্রহ বরাবরই কম। শুধু কমই নয়, আশ্চর্যভাবে কম। আমার যে আত্মীয়-বন্ধুরা এই মাধ্যমের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত, তাঁদের কাজ নিয়েও আমি প্রায় বেশিরভাগ সময়ই নীরব থাকতে বাধ্য হই। যদিও এমন নয় যে আমি ভালো ছবি দেখিনি। ঋত্বিক, সত্যজিৎ, মৃণাল, তপন, তরুণ, বাসু, হৃষীকেশ থেকে বার্গম্যান, বুনোয়েল, তারকভস্কি, ত্রুফো, গদার, কুরোসোয়া, কিম-কি-দুক, সবই কম-বেশি দেখেছি। এঁদের প্রত্যেকেরই কিছু-না-কিছু কাজ আমার মনে চিরকালীন দাগ রেখে গেছে। তারপরেও সিনেমা কোনোদিনই আমার প্রিয় শিল্পমাধ্যম নয়। অথচ বেশ মনে আছে, আশির দশকের শেষ দিকে যখন জেনেছি মহুয়া রায়চৌধুরী আগুনে পুড়ে মারা গেছেন, খুব কষ্ট পেয়েছিলাম। শ্রীমান পৃথ্বীরাজ, দাদার কীর্তি ছাড়া তাঁর আর বিশেষ কোনও ছবিও দেখিনি। তবু খুব খারাপ লেগেছিল। আসলে মহুয়া যে শুধু দেখতে সুন্দরী ছিলেন তা তো নয়, বরং তাঁর অভিনয় দক্ষতা ছিল চোখে পড়ার মতো। এমনকি তাঁর নীরব অভিনয়ও ছিল যথেষ্ট বাঙময়। এহেন মহুয়ার রহস্যমৃত্যু, রুপোলিজগৎ সম্পর্কে আমার মনে আরও নেতিবাচক ধারণা তৈরি করেছিল। মহুয়া মারা যাওয়ার পরে বুঝেছিলাম যে তাঁকে আমার খুব ভালো লাগত। তখনও আমি স্কুলের গণ্ডি ছাড়াইনি। বড় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সেই ভালোলাগার কথা ভুলে যেতেও অবশ্য বেশি সময় লাগেনি।
এতদিন পর, লেখক-বন্ধু দীপারুণ ভট্টাচার্যের সৌজন্যে সেই ঘা আবার টাটকা হয়ে উঠল। দীপ প্রকাশন থেকে বেরোনো দীপারুণের ‘নিঃসঙ্গ মহুয়া’ বইটির কথা জানামাত্রই সংগ্রহ করেছিলাম। কেননা ‘সাপ্তাহিক বর্তমান’ পত্রিকায় যখন ওঁর ‘নিঃসঙ্গ নক্ষত্র’ প্রকাশ পাচ্ছিল তখনই মহুয়াকে নিয়ে লেখা কিস্তিগুলো যথেষ্ট জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল। আমার বউয়ের কাছেই কথাটা শুনেছিলাম। আমি পড়তে শুরু করার আগে বইটা শেষ করেছিল আমার বউই। ওর পড়ার ধরন দেখেই বুঝেছিলাম বইটার বিপুল টান আছে। নিজে পড়তে গিয়ে মনে হল যেন আমি মহুয়া রায়চৌধুরীর জীবন অবলম্বনে একটা ‘বায়োপিক’ সিনেমা দেখছি। লেখক পর্বগুলোকে এমন করে ভাগ করেছেন যেন এক-একটা ‘সিন’। বইটার ভাষায় সাহিত্যিক কসরত আদৌ নেই, বরং সাবলীল বর্ণনায়, কাহিনির নিটোল বুননে, তিনি মহুয়ার জীবনকে এমন বিশ্বাসযোগ্যভাবে প্রাঞ্জল করে তুলেছেন যেন একটা অখণ্ড চলচ্ছবি ফুটে উঠছে চোখের পর্দায়। আমার মতো সিনেমাবিমুখ মানুষও যখন বইটা পড়ে এমন নিখাদ সিনেমা দেখার আমোদ পেতে পারে, তখন প্রকৃত সিনেমাপ্রেমী মানুষের মনে এই বই যে কী আলোড়ন সৃষ্টি করবে, তা আমি অল্পবিস্তর ধারণা করতে পারছি।
আমার বেশ কিছু বন্ধু আছেন যাঁরা সিনেমা বানান, তাঁদেরকেও এই অবসরে জানিয়ে রাখলাম কথাটা। এ কাহিনি পর্দায় এলে, বাংলা ছবির দর্শক এক কালজয়ী ট্র্যাজেডির সাক্ষী হতে পারবে আমার স্থির বিশ্বাস। আর যাঁরা আমার মতো বই-পড়ে সিনেমা দেখার চেয়ে বেশি আনন্দ পান, তাঁরা বইটি সংগ্রহ করে ফেলুন এক্ষুনি। অন্তত, পয়সা যে জলে যাবে না, সে গ্যারান্টি আমার।
নিঃসঙ্গ মহুয়া / দীপারুণ ভট্টাচার্য / দীপ প্রকাশন / মুদ্রিত মূল্য— ২৭৫ টাকা / প্রচ্ছদ— সুব্রত চৌধুরী
Видео #books #mohuyaroychoudhuri #diparun #bengalimovie #bengalivlog #mohuya канала Diparun Bhattacharyya
--
লিখেছেন বিশিষ্ট কবি, শোভন ভট্টাচার্য
চলচ্চিত্র বিষয়ে আমার আগ্রহ বরাবরই কম। শুধু কমই নয়, আশ্চর্যভাবে কম। আমার যে আত্মীয়-বন্ধুরা এই মাধ্যমের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত, তাঁদের কাজ নিয়েও আমি প্রায় বেশিরভাগ সময়ই নীরব থাকতে বাধ্য হই। যদিও এমন নয় যে আমি ভালো ছবি দেখিনি। ঋত্বিক, সত্যজিৎ, মৃণাল, তপন, তরুণ, বাসু, হৃষীকেশ থেকে বার্গম্যান, বুনোয়েল, তারকভস্কি, ত্রুফো, গদার, কুরোসোয়া, কিম-কি-দুক, সবই কম-বেশি দেখেছি। এঁদের প্রত্যেকেরই কিছু-না-কিছু কাজ আমার মনে চিরকালীন দাগ রেখে গেছে। তারপরেও সিনেমা কোনোদিনই আমার প্রিয় শিল্পমাধ্যম নয়। অথচ বেশ মনে আছে, আশির দশকের শেষ দিকে যখন জেনেছি মহুয়া রায়চৌধুরী আগুনে পুড়ে মারা গেছেন, খুব কষ্ট পেয়েছিলাম। শ্রীমান পৃথ্বীরাজ, দাদার কীর্তি ছাড়া তাঁর আর বিশেষ কোনও ছবিও দেখিনি। তবু খুব খারাপ লেগেছিল। আসলে মহুয়া যে শুধু দেখতে সুন্দরী ছিলেন তা তো নয়, বরং তাঁর অভিনয় দক্ষতা ছিল চোখে পড়ার মতো। এমনকি তাঁর নীরব অভিনয়ও ছিল যথেষ্ট বাঙময়। এহেন মহুয়ার রহস্যমৃত্যু, রুপোলিজগৎ সম্পর্কে আমার মনে আরও নেতিবাচক ধারণা তৈরি করেছিল। মহুয়া মারা যাওয়ার পরে বুঝেছিলাম যে তাঁকে আমার খুব ভালো লাগত। তখনও আমি স্কুলের গণ্ডি ছাড়াইনি। বড় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সেই ভালোলাগার কথা ভুলে যেতেও অবশ্য বেশি সময় লাগেনি।
এতদিন পর, লেখক-বন্ধু দীপারুণ ভট্টাচার্যের সৌজন্যে সেই ঘা আবার টাটকা হয়ে উঠল। দীপ প্রকাশন থেকে বেরোনো দীপারুণের ‘নিঃসঙ্গ মহুয়া’ বইটির কথা জানামাত্রই সংগ্রহ করেছিলাম। কেননা ‘সাপ্তাহিক বর্তমান’ পত্রিকায় যখন ওঁর ‘নিঃসঙ্গ নক্ষত্র’ প্রকাশ পাচ্ছিল তখনই মহুয়াকে নিয়ে লেখা কিস্তিগুলো যথেষ্ট জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল। আমার বউয়ের কাছেই কথাটা শুনেছিলাম। আমি পড়তে শুরু করার আগে বইটা শেষ করেছিল আমার বউই। ওর পড়ার ধরন দেখেই বুঝেছিলাম বইটার বিপুল টান আছে। নিজে পড়তে গিয়ে মনে হল যেন আমি মহুয়া রায়চৌধুরীর জীবন অবলম্বনে একটা ‘বায়োপিক’ সিনেমা দেখছি। লেখক পর্বগুলোকে এমন করে ভাগ করেছেন যেন এক-একটা ‘সিন’। বইটার ভাষায় সাহিত্যিক কসরত আদৌ নেই, বরং সাবলীল বর্ণনায়, কাহিনির নিটোল বুননে, তিনি মহুয়ার জীবনকে এমন বিশ্বাসযোগ্যভাবে প্রাঞ্জল করে তুলেছেন যেন একটা অখণ্ড চলচ্ছবি ফুটে উঠছে চোখের পর্দায়। আমার মতো সিনেমাবিমুখ মানুষও যখন বইটা পড়ে এমন নিখাদ সিনেমা দেখার আমোদ পেতে পারে, তখন প্রকৃত সিনেমাপ্রেমী মানুষের মনে এই বই যে কী আলোড়ন সৃষ্টি করবে, তা আমি অল্পবিস্তর ধারণা করতে পারছি।
আমার বেশ কিছু বন্ধু আছেন যাঁরা সিনেমা বানান, তাঁদেরকেও এই অবসরে জানিয়ে রাখলাম কথাটা। এ কাহিনি পর্দায় এলে, বাংলা ছবির দর্শক এক কালজয়ী ট্র্যাজেডির সাক্ষী হতে পারবে আমার স্থির বিশ্বাস। আর যাঁরা আমার মতো বই-পড়ে সিনেমা দেখার চেয়ে বেশি আনন্দ পান, তাঁরা বইটি সংগ্রহ করে ফেলুন এক্ষুনি। অন্তত, পয়সা যে জলে যাবে না, সে গ্যারান্টি আমার।
নিঃসঙ্গ মহুয়া / দীপারুণ ভট্টাচার্য / দীপ প্রকাশন / মুদ্রিত মূল্য— ২৭৫ টাকা / প্রচ্ছদ— সুব্রত চৌধুরী
Видео #books #mohuyaroychoudhuri #diparun #bengalimovie #bengalivlog #mohuya канала Diparun Bhattacharyya
Комментарии отсутствуют
Информация о видео
20 марта 2025 г. 20:21:42
00:00:53
Другие видео канала